লাইফ ইন্সুরেন্স কি? জীবন বীমা বা লাইফ ইন্সুরেন্স এর সুবিধা সমুহ
লাইফ ইন্সুরেন্স বা জীবন বীমা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আমাদের আজকের এই নিবন্ধটি সাজানো হয়েছে। এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানুন।

লাইফ ইন্সুরেন্স: লাইফ ইন্সুরেন্স বা জীবন বীমা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আমাদের আজকের এই নিবন্ধটি সাজানো হয়েছে। আপনি যদি লাইফ ইন্সুরেন্স সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন অথবা আপনি যদি মনে করেন জীবন বীমা বা লাইফ ইন্স্যুরেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানবেন তাহলে আমাদের এই নিবন্ধটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়বেন। জীবন বীমা বা লাইফ ইন্সুরেন্স সম্পর্কে আপনার ধারণা এই আলোচনার মাধ্যমে পাল্টে যাবে। Read in English
Make Money Online With Mobile 2022
প্রতিদিন ফ্রি ১০০ টাকা মোবাইল রিচার্জ করুন অথবা বিকাশে টাকা নিন
লাইফ ইন্সুরেন্স এর মাধ্যমে কিভাবে আপনি নিজের অথবা আপনার পরিবারের ভবিষ্যৎ কে আরো সুন্দর করে তুলতে পারবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যাদি আমরা জানানোর চেষ্টা করেছি। লাইফ ইন্সুরেন্স গ্রহণ করলে আপনার ভবিষ্যৎ অনেকটা নিশ্চিত হয়ে উঠবে। অথবা কোন দুর্ঘটনা বা কোন কারণে যদি আপনি আপনার পরিবারের লোকজনের সাথে না থাকতে পারেন তাহলে এই লাইফ ইন্সুরেন্স এর মাধ্যমে তাদের জীবনটা সুন্দরভাবে কেটে যেতে পারবে।
তবে লাইফ ইন্সুরেন্স কেনার আগে অবশ্যই আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু তথ্য অনুসন্ধান করতে হবে। বিভিন্ন কোম্পানি নানা ধরনের লাইফ ইন্সুরেন্স বিক্রি করে থাকে। আপনাকে যাচাই-বাছাই করে বিভিন্ন দিকে নজর রেখে লাইফ ইন্সুরেন্স কিনতে হবে। লাইফ ইন্সুরেন্স কেনার পূর্বে কোন বিষয়গুলোতে নজর দিতে হবে সেগুলো আজকের এই নিবন্ধ থেকে জেনে নিন।
লাইফ ইন্সুরেন্স কি?
লাইফ ইন্সুরেন্স কেনার পরিকল্পনা করার পূর্বে জেনে নিতে হবে লাইফ ইন্সুরেন্স কি এবং লাইফ ইন্সুরেন্স এর সুবিধা গুলো কি কি। চলুন তাহলে সর্বপ্রথমে জেনে নেই লাইফ ইন্সুরেন্স বা জীবন বীমা কাকে বলে।
জীবন বীমা / লাইফ ইন্সুরেন্স: লাইফ ইন্সুরেন্স বা জীবন বীমা হল একজন ব্যক্তি এবং একটি বীমা প্রদানকারী সংস্থার মধ্যে এমন একটি চুক্তি যাতে বীমা কোম্পানি মাসিক বা বার্ষিক প্রিমিয়াম এর বিনিময়ে পলিসিধারীকে আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করবে। অর্থাৎ পলিসিধারী প্রতি মাসে অথবা প্রতিবছরে বীমা প্রতিষ্ঠানকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিবে। এবং কোনরকম দুর্ঘটনা হলে অথবা মেয়াদ শেষ হলে বীমা কোম্পানি পলিসিধারীকে নির্দিষ্টকৃত টাকা প্রদান করবে।
ফেসবুক থেকে আয় করার উপায়। 2022 সালে ফেসবুক থেকে আয়
জীবন বীমার সংজ্ঞা অনুসারে বীমা কারী ব্যক্তি তার এবং তার মনোনীত ব্যাক্তিদের নাম উল্লেখ করে। বীমা কোম্পানি উক্ত বীমা কারী ব্যক্তিকে অথবা তার নির্ধারিত নমিনিকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করে। অর্থের পরিমাণ এবং অর্থ প্রদানের সময় চুক্তির ওপর নির্ভর করে।
লাইফ ইন্সুরেন্স প্রিমিয়াম কি?
বীমা কারি ব্যক্তি একটি বীমা কোম্পানির সাথে চুক্তি করা সম্পন্ন করলে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী বীমা কারী ব্যাক্তি উক্ত কোম্পানিকে একটি অর্থ প্রদান করবে। এই প্রদানকৃত অর্থটি মাসিক, বার্ষিক অথবা এককালীন পেমেন্ট হতে পারে। এই টাকা বা অর্থকেই প্রিমিয়াম বলা হয়। নির্দিষ্ট সময় পর অথবা পলিসিধারী অপ্রত্যাশিতভাবে মৃত্যুবরণ করলে বীমা কোম্পানি তার সুবিধাভোগীদের এই অর্থ প্রদান করবে।
জীবন বীমা বা লাইফ ইন্সুরেন্স এর সুবিধা
জীবন বীমা বা লাইফ ইন্সুরেন্সের অনেক সুবিধা রয়েছে। আমাদের এই নিবন্ধের মাধ্যমে জীবন বীমা পরিকল্পনার ৪ টি প্রধান সুবিধা নিয়ে আলোচনা করব। কেন আপনার জীবন বীমা বা লাইফ ইন্সুরেন্স কেনা উচিত তা আলোচনার এই অংশ থেকে বুঝতে পারবেন। জীবন বীমা বা লাইফ ইন্সুরেন্স এর সুবিধা গুলো নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো-
আর্থিক নিরাপত্তা: জীবন বীমা আপনাকে আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করে। মনে করে দেখুন এই মুহূর্তে আপনি আপনার পরিবারের সাথে রয়েছেন, আপনি সুস্থ সবল রয়েছেন এবং আপনার পরিবার চালাতে পারছেন। হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেলে তখন আপনার পরিবারের কি হবে? যখন আপনি থাকবেন না তখন আপনার পরিবারের সাথে কি হবে?
এই মুহূর্তে যদি আপনি একটি লাইফ ইন্সুরেন্স চিনেন তাহলে তা আপনার ভবিষ্যৎ সময়ে কাজে লাগবে। আপনার বৃদ্ধ বয়সে অথবা আপনার অনুপস্থিতিতে এই টাকাটা আপনার পরিবারকে সাহায্য করবে। আপনার অনুপস্থিতিতেও আপনার পরিবার সুরক্ষিত থাকবে।
দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয়: আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ বা সঞ্চয় করতে চান তাহলে জীবন বীমা আপনার কাজে আসবে। জীবন বীমা পরিকল্পনাই আপনি এখন যদি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করেন তাহলে ভবিষ্যতে আপনি সেটি বড় ধরনের কোন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।
এককালীন টাকা দিয়ে জীবন বীমা কিনলে আপনার টাকাটি সুরক্ষিত থাকবে। এবং আপনি সময় মতো সেই টাকাটি খরচ করতে পারবেন। নতুন বাড়ি তৈরি, সন্তানদের মানসম্মত প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, সন্তানের বিয়ের খরচ সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজে আপনি তা ব্যবহার করতে পারবেন।
নিশ্চিত আয়ের উৎস: জীবন বীমা পরিকল্পনা বা লাইফ ইন্সুরেন্স আপনার জন্য একটি নিশ্চিত আয়ের উৎস হয়ে উঠতে পারে। আপনি আপনার পরিবারের জন্য একটি নিশ্চিত আ এর উচ্চ তৈরি করতে পারবেন। আপনার উপস্থিতিতে আপনার পরিবার যেমন নিরাপদ করে তেমনিভাবে আপনি যদি একটি লাইফ ইন্সুরেন্স কিনে থাকেন তাহলে আপনার অনুপস্থিতিতে বা আপনার বৃদ্ধকালীন সময়েও আপনার পরিবার নিরাপদ বোধ করবে।
সঠিক সময়ে এই সঞ্চয় আপনার বৃদ্ধকালীন সময় অথবা আপনার অনুপস্থিতিতে আপনার পরিবারের বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করবে।
লোন সুবিধা: হঠাৎ জরুরি কোন প্রয়োজনে যদি টাকা দরকার হয় তাহলে আপনি জীবন বীমা কভারেজ এর বিপরীতে টাকা ঋণ নিতে পারবেন। আপনার যদি লাইফ ইন্সুরেন্স পলিসি কিনা থাকে তাহলে সেই বীমা কোম্পানি থেকে আপনি বড় অংকের টাকা ঋণ নিতে পারবেন। বর্তমানে সকল বড় বড় বীমা কোম্পানিগুলো তাদের পলিসিধারীদের জন্য কম সুদে ঋণ প্রদান করে থাকে।
তবে বীমা কোম্পানির থেকে লোন নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই সকল প্রকার শর্ত সমূহ ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।
জীবন বীমা বা লাইফ ইন্সুরেন্স এর প্রকারভেদ
বর্তমানে সময়ের অনেকেই জীবন বীমা সম্পর্কে সচেতন। জীবন বীমা কেনার বা শুরু করার পূর্বে অবশ্যই এর প্রধান প্রকারভেদ বলেছেন নেওয়া উচিত। নিচে জীবন বীমা বা লাইফ ইন্সুরেন্স এর প্রকারভেদ গুলো উল্লেখ করা হলো।
টার্ম লাইফ ইন্সুরেন্স: টার্ম লাইফ ইন্সুরেন্স মূলত কম ঝুঁকিমুক্ত এবং কম খরচে সর্বোচ্চ কভারেজ হিসেবে বিবেচিত করা হয়। এই পরিকল্পনা গুলি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কেনা হয়। এই সময় শেষ হলে অথবা বীমাকৃত ব্যক্তির মৃত্যু হলে বীমা কোম্পানি একটি নির্দিষ্ট অর্থ পরিশোধ করে।
টার্ম লাইফ ইন্সুরেন্স অন্যান্য সকল লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্ল্যান গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিশুদ্ধ। এই প্লেনে কোনরকম সঞ্চয় বা মুনাফার উপাদান ছাড়াই লাইভ কভার করা হয়।
এন্ডইমেন্ট বা গ্যারান্টি যুক্ত রিটার্ন প্ল্যান: এই প্ল্যান এর মাধ্যমে গ্যারান্টি যুক্ত রিটার্ন প্লান অনুযায়ী লাইভ কভার সুরক্ষা প্রদান করা হয়। এই পলিসির মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত বীমাকৃত ব্যক্তি জীবিত থাকলে একগুচ্ছ টাকা পাবেন।
বড় ধরনের সঞ্চয়ের জন্য এই প্ল্যান গুলো দুর্দান্ত। তবে খুব কম সংখ্যক ব্যক্তি এই প্ল্যানগুলো ক্রয় করে থাকে।
মানি ব্যাক পলিসি: এই প্ল্যান বাপের পলিসি অনুযায়ী গ্রাহক নির্দিষ্ট সময় পরে গ্যারান্টি যুক্ত অর্থ পাবেন। স্বল্প মেয়াদে আর্থিক সঞ্চয় গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মানি ব্যাক পলিসি খুব ভালো। বীমা কারি বা এই প্ল্যান কেনা ব্যক্তি স্বল্প মেয়াদী আর্থিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারে।
জীবন বীমা কিভাবে করবেন
জীবন বীমা বা লাইফ ইন্সুরেন্স প্ল্যান কেনার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে সকল দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী আপনি মাসিক অথবা বার্ষিক কি পরিমান প্রিমিয়াম প্রদান করবেন বা করতে পারবেন তা অবশ্যই আগে নির্দিষ্ট করে নিতে হবে। মনে রাখবেন আপনার প্রিমিয়াম যত বেশি হবে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বা ক্ষতিপূরণ আদায়ের সময় আপনার প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণও বেশি হবে।
যতটুকু আপনার সামর্থ্য রয়েছে সেই অনুযায়ী সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রেমিয়ামের জীবন বীমা ক্রয় করবেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে অর্থের পরিমাণ বেশি হলেই সেটা আপনার জন্য সব সময় লাভজনক হবে না। লাইফ ইন্সুরেন্স প্ল্যান কেনার পূর্বে অবশ্যই আরো কিছু ব্যাপারে নজর রাখতে হবে।
যেমন প্রিমিয়াম পলিসি, রিটার্ন পলিসি, ট্যাক্স পলিসি, নমিনি পলিসি, ম্যাচুরিটি সুবিধা ইত্যাদি।
কোন বীমা কিনার পূর্বেই আপনি ঠিক করে নিবেন ঠিক কত বছরের জন্য আপনি লাইফ ইন্সুরেন্স প্ল্যান কিনতে চাচ্ছেন এবং আপনি প্রতি মাসে অথবা বছরে কি পরিমান প্রিমিয়াম জমা দিবেন। আপনার সুবিধা অনুযায়ী আপনি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিমা অথবা লাইফটাইম বীমা করতে পারবেন। লাইফ ইন্সুরেন্স প্ল্যান কেনার পূর্বে অবশ্যই সকল বিষয় নিশ্চিত হয়ে নিবেন।
শেষ কথা / উপসংহার
আপনি যদি সিরিয়াস ভাবে লাইফ ইন্সুরেন্স প্ল্যান অথবা জীবন বীমা করাতে চান তাহলে অবশ্যই লোকাল এজেন্টদের সাথে কথা না বলে সরাসরি বীমা অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করবেন। কারো এক কথায় বিশ্বাস না করে বিভিন্ন বীমা কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে রিসার্চ করুন এবং আপনি দেখবেন কোন প্রতিষ্ঠানটি আপনাকে সেরা অফার দিচ্ছে। এবং সেই প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সম্পন্ন করবেন।
লাইফ ইন্সুরেন্স সম্পূর্ণ আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য। এটি পরবর্তী সময়ে আপনাকে অথবা আপনার পরিবারকে আর্থিক সুবিধা প্রদান করবে। তাই যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্বে অবশ্যই ভেবে চিন্তে নিবেন। আশা করি লাইফ ইন্সুরেন্স সম্পর্কে সকল তথ্যসমূহ আপনাকে বোঝাতে পেরেছি। আপনার প্রয়োজনে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য ধন্যবাদ।